দীর্ঘ ৭ বছর পর ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির আসন্ন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। সর্বশেষ কাউন্সিল ও নির্বাচন হয়েছিল ২০০৯ সালে। এর আগের বছর (২০০৮) ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখা নামে বিএনপির নতুন এ কমিটির যাত্রা শুরু হয়। সেসময় উক্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির ত্যাগী নেতা এম মমতাজুল ইসলাম ও সাবেক এপিপি এডভোকেট সাহাব উদ্দীন আর সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। বর্তমানে এডভোকেট সাহাব উদ্দীন পবিত্র হজ্জ্বব্রত পালন উপলক্ষে সৌদি আরব রয়েছেন। আর এম মমতাজুল ইসলাম ধর্মীয় কার্যক্রম ও ব্যবসা-বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন। তখন সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম কক্সবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সাথে সংযুক্ত ছিল। এবার ৩শ ৫৫ জন কাউন্সিলর রয়েছে। উপজেলা শাখায় অন্তর্ভূক্ত ইউনিয়ন হচ্ছে বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৫টি ইউনিয়ন। এগুলো হলো ঈদগাঁও, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, ইসলামপুর ও পোকখালী ইউনিয়ন। সম্মেলন ও কাউন্সিলের দিন ঠিক করা হয়েছে ১২ অক্টোবর বিকেল ২টায়। বাসস্টেশনে পাহাড়িকা কমিউনিটি সেন্টারে দ্বি-বার্ষিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আহবায়ক কমিটির ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে অবশেষে বহুল আলোচিত এ কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে চলছে নানা হিসেব-নিকেষ। উপজেলা ও তৃণমূল নেতাদের সাথে আলাপে জানা গেছে, আসন্ন কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সভাপতি পদে বর্তমান আহবায়ক কমিটির আহবায়ক শহিদুর রহমান শহিদই একমাত্র প্রার্থী বলে শোনা যাচ্ছে। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. শওকত আলম শওকত, যুগ্ম আহবায়ক মনজুর আলম এমএসএস এবং যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ শফির নাম নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কেবল একজনের নাম সংগঠন সূত্রে জানা গেছে। তিনি হলেন বর্তমান ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি, সাবেক স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা হারুন অর রশিদ। প্রতিটি ইউনিয়নের সভাপতি, সেক্রেটারী ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৭১ জন করে কাউন্সিলর উপজেলা শাখার ভোটে অংশ নিতে পারবেন। ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপি আহবায়ক শহিদুর রহমান শহিদ, সদস্য সচিব মো. শওকত আলম এবং যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ শফির সাথে সম্মেলন ও কাউন্সিলে বিভিন্ন পদের প্রার্থী সম্পর্কে কথা হলে তারা সাফ বলে দেন, ৩৫৫ জন কাউন্সিলর বিভিন্ন পদে সকলেই প্রার্থী আবার সকলেই ভোটার। তারা পদ ভিত্তিক প্রার্থীতার কথা অস্বীকার করলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বক্তব্য, বর্তমান আহবায়ক কমিটির ৫ জনকেই পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিভিন্ন পদে স্থলাভিষিক্ত করা হতে পারে। ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ও উপজেলার কাউন্সিলর আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম জানান, দলে যারা বিভিন্ন ভাবে সময় ও অর্থ দিয়ে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম ও দূর্দিনে নেতাকর্মীরা যাদের সবসময় কাছে পেয়েছেন তাদেরকেই যোগ্যতা বিচারে ভোট দিয়ে উপজেলা কমিটিতে নির্বাচিত করা হবে। ইসলামাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব ছানা উল্লাহ জানান, তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা কমিটিকে আরো ২/৩ কাউন্সিল পর্যন্ত সরাসরি ভোট না করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা উর্ধ্বতন সংগঠনকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বলে জানান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন নির্বাচন হবে না এটা আপাতত চূড়ান্ত। সম্মেলনের দিন নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে আবার নাও হতে পারে। তিনি বর্তমান আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করতে পারেন বলে মনে করেন। জালালালাবাদ বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির অন্যতম কাউন্সিলর বজল আহমদ জানান, সভাপতি পদে বর্তমান আহবায়ক ব্যতীত অন্য কোন প্রার্থী নেই। আর সাধারণ সম্পাদক পদে শওকত আলম মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সাবেক সাংসদ কাউন্সিল ছাড়াই ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করতে পারেন বলে তার ধারণা। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হলে তিনি যাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধা রয়েছে ভোটদানের ক্ষেত্রে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে মন্তব্য করেন। এর সাথে তিনি আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টিও যুক্ত করেন। তার মতে, দক্ষতা ও যোগ্যতাই হচ্ছে একজন সংগঠকের মূল চালিকা শক্তি। এদিকে কয়েক দফে উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট আসন্ন কাউন্সিলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কেবল বলেন, কাউন্সিলরদের সকলেই প্রার্থী আবার সকলেই ভোটার। অন্যদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও বাজারস্থ বিএনপির পার্টি অফিস এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য। সভাপতি, সেক্রেটারী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছে কিনা তা নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের কাউন্সিলরদের মধ্যে চলছে চূলচেরা বিশ্লেষণ। সংগঠন সূত্র জানায়, কাউন্সিলে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও রামু-কক্সবাজারের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজল। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি শামীম আরা স্বপ্না। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বর্তমান আহবায়ক শহিদুর রহমান শহিদ।
প্রকাশিত: ১০/১০/২০১৫ ১০:৩৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বিএনপি আয়োজিত সমাবেশের জন্য গাড়ির দাবি করেছেন নরসিংদী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ...
পাঠকের মতামত